বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৫

নিঝুম নীরবতার প্যারিস নগরী


১৩ নভেম্বরের,  ফ্রান্স জার্মানীর প্রীতি ফুটবল ম্যাচ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে উঠলো প্যারিস এ্যাটাক।একটু অবিশ্বাসবোধ নিয়ে ফরাসি ভাষায় বোঝার চেষ্টা করছিলাম কি ঘটেছে।ফ্রান্স জার্মানির কাছে ২-০ গোলে ম্যাচ জিতেছে কিন্তু ম্যাচ পরবর্তী খেলার বিশ্লেষন, পুরস্কার বিতরণী,দর্শকদের বিজয় উল্লাসের কোন মুহুর্ত আর টেলিভিশনের প্রচার  না দেখে মনে হলো সত্যি প্যারিসের বুকে কোন অশুভ তান্ডব চলছে।কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রায় প্রতিটি টেলিভিশন চ্যানেলের পর্দায় ভেসে আসতে লাগলো ঘটে যাওয়া নির্মমতার বাস্তব চিত্র এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা।যা দেখে মনে হচ্ছিলো রোমাঞ্চোকর নগরী যেন রনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।মনের মধ্যে কিছুটা আশংকাবোধ কাজ করছিলো কারণ প্যারিসের গুরত্বপূর্ণ জনবহুল স্থান ও এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় একের পর এক মৃত্যুর সংখ্যা গননা করে টিভি চ্যানেলগুলো সংবাদ পরিবেশন করে চলছে।


আমি যে এলাকায় বাস করি এটি প্যারিসের অন্যতম গুরত্বপূর্ণ একটি জনবহুল পর্যটন স্থল ‘মনমাদ’।এখানে সব সময় আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা থাকলেও শার্লি এবদোর অফিসে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে এখানে এক সেকশন সেনা সদস্যের ক্যাম্প স্থাপন করে বাড়তি নিরাপত্তা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রাখা হয়েছে।তাই এখানে এমন কোন ঘটনা ঘটে কিনা সেই দ্যোদুল্যমান ভীতি নিয়ে ঘুমোতে যাই। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফেজবুকে চোখ বুলোতেই দেখি ম্যাসেজ ইন-বক্সে জমা পড়ে আছে অনেকগুলো ম্যাসেজ ,পরিচিত বন্ধু স্বজনদের অনেকেই আমাদের পরিস্থিতির জানতে চেয়েছে।এখানে অবস্থানরত পারিবারিক বন্ধুদের অনেকেই ফোনে সতর্ক করে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিলো।এত বড় ঘটনা ঘটার পরে আরো অনেক কিছুই ঘটার আশংকা থাকে তাছাড়া জরুরী অবস্থা জারির কারনে  বাইরে না বের হয়ে টিভি পর্দায় চোখ রেখেই সারা দিন কাটিয়ে  দিলাম গৃহবন্দি হয়ে।ঘটনার একদিন পর রোববার প্যারিসে জনমনের আতংক কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় তাই সন্ত্রাসী হামলার স্বীকারের  শোকার্ত স্বজন ও শান্তিকামী শত শত জনতা রিপাবলিক চত্তরসহ হতাহতের স্থানগুলোতে নিহতদের স্বরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ প্রদর্শন করতে বাইরে বের হয়েছে তাই বিকেল পাঁচটার দিকে আমার কন্যা মিশেলকে নিয়েই ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়লাম বেদনার্ত প্যারিসের বাস্তব রুপ পর্যবেক্ষণের জন্য।ঘর থেকে বেরিয়েই মনমাদে যেতেই দেখা মিললো পুলিশের বিশেষ ফোর্স জনদারমোরী(Gendarmerie)এর সতর্ক প্রহরা।যেন প্রতি মুহুর্তেই প্রহরীর স্বয়ংক্রীয় অস্ত্র সন্ত্রাসীর বক্ষ ভেদ করার জন্য সদা প্রস্তুত।পর্যটকদের আনাগোনা ও পথশিল্পীদের সংগীত মুর্ছনায় মুখরিত প্রাণোচ্ছল এলাকাটি যেন আইন শৃংখলা বাহিনীর সতর্ক প্রহরায় এক  যুদ্ধক্ষেত্রের রুপ নিয়েছে।   


 (Anvers) অভ্যর থেকে ত্রিশ নম্বর বাসে চড়ে রওনা দিলাম আইফেল টাওয়ারের উদ্দেশ্যে।রোববারে সাপ্তাহিক ছুটির কারনে এখানে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ভীর কম থাকে।কিন্তু এদিন অস্বাভাবিক যাত্রী শূন্যতা মনে হলো। বাসের মধ্যে চার পাঁচ জনের যে সহযাত্রী পেলাম তাদের মধ্যে লক্ষ্য করলাম গভীর নীরবতা।প্যারিসের  পাবলিক ট্রান্সপোর্টে উঠলে  যাত্রীদের মধ্যে যে ব্যাপারগুলো সহজেই চোখে পড়ে তাহলো কেউ হেডফোন দিয়ে গান শুনছে কেউ বই পড়ছে কেউ কাউকে বিরক্তিকর কোনকিছু না করে সুসভ্য মানুষের মত নিরবে বসে আছে যা নীরব প্রাণচাঞ্চল্য আবহের সৃষ্টি করে।কিন্তু এদিন মনে হলো  বাসের মধ্যে এক দারুন বিষাদের পরিবেশ তৈরী হয়ে আছে।সপ্তাহের প্রতি শনি রোববার ছুটির দিনগুলোতে এখানকার বার রেস্তোরাগুলোর তেরাজ আড্ডায় সরগরম থাকে।কিন্ত এই দিনে প্রাত্যাহিক দিনের চিরচেনা প্যারিসকে একেবারের অচেনা মনে হচ্ছিলো ।অধিকাংশ রেস্তোরাগুলোই বন্ধ ,চলার পথে দু চারটির যা চোখে পড়লো তাও সরকারী নির্দেশে তেরাজ বন্ধ্ রাখা হয়েছে ,ভেতরের মৃদমন্দা আলোয় দেখতে পেলাম কিছু মানুষের আড্ডা।জনমানবহীন রাস্তার এমন দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিলো ,গভীর বন বা বিরান ভূমির পথ দিয়ে চলতে চলতে হঠাৎ চোখে পড়া কুপি জ্বালানো পুরনো পানশালা যেমন। আইফেল টাওয়ারে  পৌঁছানোর পর দেখলাম টাওয়ারের সামনে পানির ফোয়ারাগুলো আগের মতোই ক্ষীপ্র গতিবেগে জলের ধারা প্রবাহিত করছে কিন্তু এই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সৌন্দর্য পিপাসুদের ভীর নেই।নিরাপত্তাজনিত কারণে আইফেল টাওয়ারের বিরামহীন ছুটে চলা লিপ্টগুলোকে অনির্দিষ্ট দিনের জন্য অবসর দেওয়া হয়েছে।সেন নদীর বুকে ভেসে বেড়ানো প্রমোদতরীগুলো ভ্রমনার্থীদের অভাবে নিজ নিজ ঘাটে নোঙ্গর করে আছে।


ফিরতি বাসে বাসায় ফেরার পথে চোখে পড়লো প্যারিসের জনপ্রিয় এ্যাভিনিউ ও অভিজাত এলাকাগুলোতে ক্রিসমাস ও নিউ ইয়ার উদযাপনের বাহারী আলোকসজ্জার বৈচিত্রময় প্রতিকৃতিগুলো রাস্তার পাশদিয়ে অবস্থান নিয়ে উৎসব আনন্দ দেবার জন্য ক্রমাগত জ্বলছে নিভছে কিন্তু  বিষাদের এমন দিনে উৎসব আনন্দের আলোকসজ্জার সৌন্দর্য ম্রিয়মাণ হয়েগিয়েছে।তারন্যের আড্ডা স্থল অপেরাকে মনে হলো এক নির্ঝুম নিস্তব্ধতার চাদরে ঢাকা পড়েছে।


এই রোমান্টিক নগরীতে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এলেও জনমনে রয়েছে সংশয়।হয়তো খুব দ্রুতই ভয় ও সংশয়ের প্রভাব কাটিয়ে আবার প্যারিস জেগে উঠবে তার স্বরূপে।সন্ত্রাস ও অপশক্তির নির্মুলের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর বৈচিত্রময় মানুষের বসবাসের এই নগরী আরো বেশী মানবতার চর্চায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে ,এটাই প্রত্যাশা। 

শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫

পৃথিবীর প্রতিটি পেশাজীবী মানুষই বুদ্ধিজীবী এবং আমাদের কথিত বুদ্ধিজীবী সমাজ

পৃথিবীর প্রতিটি  পেশার পেশাগত কর্মটি সঠিক সুচারুভাবে সম্পাদনের জন্য বুদ্ধির প্রয়োগ করতে হয়বুদ্ধি ব্যতিরেকে কোন কাজই সম্পাদন সম্ভব নয়সুতরাং সেই অর্থে একজন  পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী থেকে আরম্ভ করে পৃথিবীর সব সমাজ স্বীকৃত পেশাজীবী মানুষই বুদ্ধিজীবীকারন বুদ্ধি দিয়েই প্রত্যেক পেশাজীবীর কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হয় একজন পাগল বা মস্তিষ্ক বিকৃত উন্মাদ মানুষ তার বুদ্ধির সঠিক প্রয়োগ করতে পারেনা বলেই তার দ্বারা আর্থিক বিনিময়ের মাধ্যমে বিশেষ কোন কার্য্য সম্পাদন করানো সম্ভবপর হয়নাযার ফলে এই শ্রেনীর মানুষ সমাজের পেশাজীবী শ্রেণীর আওতাভুক্ত নয়
আমাদের দেশে বুদ্ধিজীবী শব্দটি যে অর্থে ব্যবহৃত তা একটি সামাজিক শ্রেণী বৈষম্যমূলক শব্দআমাদের সমাজে সাধারণত রাজনৈতিক ,সাংবাদিক ,বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ,সাংস্কৃতিক কর্মী ,সাহিত্যিক ,আমলা ,মানবাধিকার কর্মী,আইনজীবী এই শ্রেনীর পেশার অগ্রভাগের মানুষদের বুদ্ধিজীবী হিসেবে সম্বোধন করা হয়ে থাকে যখন কোন বিশেষ পেশার মানুষকে এধরনের সম্বোধন করা হয় সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়া হয় তখন ব্যক্তি বিশেষ নিজেকে সমাজের অন্য মানুষ থেকে আলাদা ভাবতে থাকে এবং নিজের মধ্যে এক শ্রেনীর বৈষম্যভাবাপন্ন অহংকারী মানুসিকতার উদয় ঘটায়ফলে সমাজের কারখানার ঘাম ঝড়ানো বুদ্ধিদীপ্ত পেশাজীবী শ্রমিক থেকে আরম্ভ করে অন্যান্য প্রতিটি পেশাজীবী শ্রেনীর অবমূল্যায়ন করা হয় তাছাড়া এই ধরনের সামাজিক স্বীকৃতির ফলে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের মতামত কথার উপর সমাজের মানুষের মধ্য এক ধরনের বিশ্বস্ততা   আস্থার তৈরী হয় ,ফলে তারা ভুল বলুক আর সঠিক বলুক  সেই বিবৃতির উপর সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় জনমতের সৃ্ষ্টি হয়এমন পর্যায়ে যখন একজন মানুষকে পৌঁছে দেওয়া হয় তখন তার মধ্যে সমাজ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়া বা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মনোবৃত্তির উদয় ঘটে পরবর্তীতে এই অবস্থানকে পূঁজি করে রাষ্ট্রের সুবিধাভোগী টাউট ,বাটপার ব্যক্তি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং সমাজ বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষে বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে  অন্যায়কে ন্যায়রূপে সমাজের মানুষের নিকট উপস্থাপন করেফলে সমাজে বিভাজন তৈরীর মাধ্যমে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়এই সামাজিক বিশৃঙ্খলার ফলে সুবিধাভোগী অসৎ রাষ্ট্রীয় শোষক শ্রেনী দুর্নীতি,লুটপাট করে পার পেয়ে যায় এতে রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে কিন্তু মুষ্টিমেয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা সুবিধাভোগী শ্রেণী  এদের আশেপাশের মানুষগুলো অবৈধ ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় বানিয়ে ফেলেতৈরী হয় চরম অর্থনৈতিক বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থাসমাজকে চরম দুরাশার দিকে ঠেলে দিয়ে বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতি অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরুপ এই সব সমাজসৃষ্ট তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের সম্মাননাস্বরূপ প্রদান করা হয় রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পদক
আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিচার করলে উল্লেখিত আলোচনার সবকিছুই আজ বিদ্যমান তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের চরিত্রের মধ্যে কোন এক সময় স্বাতন্ত্র্য ভাব লক্ষ্য করা গেলেও এখন তার লেশমাত্রও খুজে পাওয়া যায়নাএই সমাজসৃষ্ট বুদ্ধিজীবী মানুষগুলো এতটাই পেশাজীবী হয়েছেন যে তাদের পেশা অনেকটাই আইনজীবীদের পেশার স্বরূপ লাভ করেছেএকজন আইনজীবী যেমন পেশাগত কারণে অর্থের বিনিময়ে আদালতে একজন খুনিকে আইনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তার পক্ষে কথা বলেন ঠিক তেমনি আমাদের রাষ্ট্রের কথিত বুদ্ধিজীবীরা এখন যার যার সুবিধাভোগী মক্কেলদের পক্ষে কথা বলে থাকেন যার ফলে এদের পরিচয়ের ক্ষেত্রেও আজ একটু ভিন্নতর রূপ এসেছেউদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ,লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী যেহেতু আওয়ামিলীগের পক্ষে কথা বলেন তাই তাকে বলা হয়ে থাকে আওয়ামী বুদ্ধিজীবী অপর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজ উদ্দিন আহমেদ ,লেখক শফিক রেহমান যেহেতু বি এন পির পক্ষে কথা বলেন তাই তারা বি.এন.পি'মনা বুদ্ধিজীবীকথিত বুদ্ধিজীবি সমাজের অবস্থা আজ যে রূপ লাভ করেছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এইসব বুদ্ধি ব্যবসায়ীরা সাংগঠনিকভাবে  আওয়ামী বুদ্ধিজীবীলীগ ,জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীদল,জাতীয় বুদ্ধিজীবী সমাজ এভাবে আবির্ভাব হলেও অবাক হবোনা
দেশে চলমান কিছু নির্মম হত্যাযজ্ঞে দেশের বিবেকবান মানুষদের হতবাক করেছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের কর্ণধার ব্যক্তিরা তাদের চিরাচরিত ঐতিহ্য বজায় রেখে একে অপরকে এই ঘটনাগুলির জন্য দায়ী করে তাদের দায় সেরেছেনঅনেকেই ফেজবুকে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের এই কথিত বুদ্ধিজীবী সমাজের এই সব নির্মম ঘটনাগুলোর প্রেক্ষাপটে কোন মন্তব্য বা প্রতিবাদ না দেখে হতাশ হয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেনএর পরিপ্রেক্ষিতে আমি অনেকটাই আশ্চর্য হয়েছি যে কেন এদের প্রতিক্রিয়ার জন্য আমরা অপেক্ষা করি প্রতিটি মানুষেরই বুদ্ধি রয়েছে সেই বুদ্ধি কে কোথায় ব্যাবহার করবে তা একান্তই ব্যক্তি সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে যাদের প্রতিক্রিয়া কামনা করা হয়েছে তারা অনেক কারনেই নিশ্চুপ থাকতে পারেন : যেমন
 তারা হয়তো সুবিধাবাদী কোন গোষ্ঠীর সাথে চুক্তিবদ্ধ যার ফলে তার নিরপেক্ষ কোন মন্তব্য তার চুক্তিবদ্ধ মনিবের স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে
তাছাড়া ইন্ডিয়ার একটি সাম্প্রদায়িক ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই দেশের শিল্পী সাহিত্যিকেরা প্রতিবাদস্বরূপ তাদের রাষ্ট্রীয় পদক ফেরত দিচ্ছেন কিন্তু আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীদের যেহেতু  তাদের  পদক অর্জিত হয়  সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর তোষামোদি তাদের গুণকীর্তনের ফলে তাই কোন মন্তব্য যদি এই গোষ্ঠির বিপরীতে যায় তাহলে তাদের পদক হয়তো কেড়ে নেয়া হতে পারে ,সেই ভয়েও কৌশলগত কারনে মৌনতা অবলম্বন করতে পারেন
আবার যে সব বুদ্ধিজীবী সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর নিকট দীর্ঘ সময় বুদ্ধি সেবা প্রদান করে সরাসরি রাষ্ট্রীয় ভোগ বিলাসের সুযোগ লাভ করেছেন কিন্তু বিশেষ মন্তব্যের ফলে যদি ভোগ বিলাসী জীবন থেকে বঞ্চিত করে আবার রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয় সেই সংকায় নীরবতা অবলম্বন করতে পারে
এমন অনেক কারনেই আমাদের পেশাজীবী বুদ্ধি ব্যবসায়ীরা সম্মিতভাবে কৌশলগত নীরব ভূমিকায় আছেন
কিন্ত প্রতিটি অনাকাঙ্খিত নির্মম ঘটনায়  আমি অপেক্ষায়  থাকি  দেশের বিবেকবান মানুষের প্রতিক্রিয়া প্রতিবাদের সাম্প্রতিক দীপন হত্যাসহ প্রতিটি নৃসংশ ঘটনায় দেশের শ্রমজীবী বুদ্ধিদীপ্ত বিবেকবান মানুষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পেশার মনুষ্য হৃদয়সম্পন্ন বুদ্ধিজীবী মানুষের  প্রতিবাদ প্রতিক্রিয়ায় দারুনভাবে আশান্বিত হয়েছিআমাদের সমাজে এই শ্রেণীর মানুষ  সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘিষ্ঠ নীতি বিবর্জিত সুবিধাভোগী অমানুষদের কাছে আজ আমরা প্রতিনিয়ত পরাজিত হচ্ছিকারন সুবিধাবাদিরা সংঘবদ্ধ আর বিবেকবান শ্রেনী অসংগঠিতযেদিন প্রতিটি  পেশার বিবেকসম্পন্ন  বুদ্ধিজীবী মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে সর্বস্তরের মানুষ বিভ্রান্ত থেকে বেড়িয়ে এসে সংঘবদ্ধভাবে প্রতিবাদ প্রতিরোধ অব্যাহত রাখতে পারবে সেদিন নিশ্চিত বিবেক বর্জিত সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর পরাজয় ঘটবে