শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

সংখ্যালঘু দুষ্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র

সারা পৃথিবীর মুসলীম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশগুলো যখন যুদ্ধ, দাঙ্গা,হাঙ্গামায় জর্জরিত এবং বিশ্ব মিডিয়া ও পশ্চিমা অবিভাবকদের কূটনৈতিক চিন্তায় শরীর ঘামে ভেজা। তখন বাংলাদেশ নামের একটি দেশ যেখানে শতকরা ৮৫ জন মুসলিমের বসবাসের দেশ হওয়ার সত্বেও এই ভূখন্ডে প্রবাহিত হতে থাকে শান্তির সুবাতাস, চলতে থাকে সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার অঘোষিত প্রতিযোগিতা। মুষ্টিমেয় মৌলবাদী গোষ্টীর যে তৎপরতা তাও সরকারের নিয়ন্ত্রনে।১৯৪৭,৭১ এ দেশ বিভক্তি সময়কালে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সম্পর্কের যে বিভাজন ও অবনতি হয়েছিলো তা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষে মানুষের সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে একটি বিশেষ অবস্থানে পৌছুতেও সক্ষম হয়েছে। তার পরেও কিছু নৃশংস ঘটনাগুলো ঘটেছে। এর মধ্যে একটি মুসলিম পরিবারের সঙ্গে অন্য মুসলিম পরিবারের যে সংঘাত হয়েছে তা স্বাভাবিক ভাবেই দেখা হয়েছে। আবার যখন, একটি মুসলিম পরিবারের সাথে অন্য ধর্মাম্বলি পরিবারের যে সংঘাত হয়েছে, তখন তা যথাযত বিচার প্রক্রিয়ায় না এনে কিছু স্বার্থানেষী রাজনৈতিক দল সংখ্যালঘু নির্যাতন নাম দিয়ে রাজনৈতিক ফয়দা লুটার চেষ্টা করেছে। এধরনের ঘটনা পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায় নগন্য। দেশে সামাজিক যে স্থিতিশীলতা তৈরী হয়েছিলো তা সামাজিক সৌহার্দ্যপূর্ন্য সম্পর্কের মধ্যে দিয়েই। আমাদের দেশটা দুইটা শ্রেণীতে বিভক্ত । একটা শ্রেনী স্বার্থান্বেষী সুবিধাভোগী শ্রেনী, অন্যটি দেশ প্রেমিক সাধারণ জনতা। স্বার্থান্বেষী সুবিধাভোগী শ্রেনীর মানুষ মুষ্টিমেয় হলেও এরা অর্থ বিত্ত ও সামাজিক ভাবে প্রভাবশালী। দেশের নিয়ন্ত্রনও তাদের হাতেই। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সুবিধা এদের জন্যই বরাদ্দ। এরা অর্থ ও প্রভাবের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাঁচ বছর পর পর দেশটাকে ইজারা নিয়ে থাকে। তাই, অর্থের বিনিময় ছাড়া এদের নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা বাংলাদেশের মানুষ চিন্তাও করেনা। তাই দেশ প্রেমিক সাধারণ জনতা ভাগ্যের এই দুষ্ট পরিহাস মেনে নিয়েই গড়ে তুলেছে নিজস্ব এক সামাজিক বলয়। এক একটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমাজ যেনো এক একটি আদর্শ রাষ্ট্রের মতো। সামাজিক সমস্যাগুলো সামাজিক ভাবেই নিষ্পন্ন করার এক দারুন সংস্কৃতিও তৈরী হয়েছিলো। আমাদের এই শ্রেনীর মানুষের মধ্যে রয়েছে পবিত্র ধর্মীয় অনুভূতি, জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি পরম শ্রদ্ধা, জীবন যুদ্ধে নিজেদের টিকিয়ে রাখার আপ্রান প্রচেষ্টা।এদের চাহিদার সীমারেখাও সীমিত। এর মধ্যে দিয়েই পরিচালিত হচ্ছিল বাংলাদেশ নামের আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিটি। আমাদের সমস্ত মৌলিক অধিকার লুন্ঠনের পর, বেঁচে থাকার সর্বশেষ পূঁজি সামাজিক সৌহার্দ্য ও ধর্মীয় পবিত্র অনুভূতিটুকুর মধ্যে আজ ওদের নোংড়া হাত ডুকিয়ে দিয়ে লুটপাটের অভিযানে সহায়তার জন্য জাতিকে বিভক্ত করে দিয়েছে। আজ কেন যেন মনে হচ্ছে সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশপ্রেমিক জনতা সংখ্যালঘু দুষ্কৃতিকারী স্বার্থান্বেষী সুবিধাভোগী শ্রেনীর কাছেই পরাজিত হতে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট,সীমাহীন দুর্নীতি,দিনের পর দিন বিত্তহীন ও বিত্তবান বৃদ্ধির যে প্রতিযোগিতা চলছিলো, তা সাধারণ মানুষ যখন বুঝতে শুরু করলো, কথা বলতে শুরু করলো,সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করল, ঠিক সেই সময় ওরা জাতিকে বিভক্তির অস্ত্রটি ব্যবহার করে দিয়েছে। ওরা হয়তো বুঝতে পেরেছিলো, সংখ্যা গরিষ্ঠ জনতার আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। আজ ওদের ষড়যন্ত্রের ধোকায় পড়ে আমরা আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধংসের লীলায় মেতে উঠেছি ,নির্দ্বিধায় এক বাংলাদেশী ভাই আর এক বাংলাদেশী ভাইয়ের হত্যার হলি খেলায় মেতে উঠেছি। আজ এক পক্ষ অন্য পক্ষের হত্যাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি । এই হত্যা লীলার যে বীজ ওরা সমাজের মধ্যে ডুকিয়ে দিয়েছে, তা এখনি সামাজিক ভাবে বিনষ্টের উদ্যেগ না নিলে এবং সচেতন নাহলে আগামীতে হয়তো কোন পক্ষেরই অপমৃত্যুর হাত থেকে রেহাই মিলবেনা।চক্রান্তকারীরা বিদেশে অবস্থান করবে, ভোগ বিলাসেরও কোন কমতি থাকবেনা কিন্তু আমার আপনার এই দেশেই অবস্থান করতে হবে, এই সমাজ থেকেই রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে হবে।সেই সমাজের স্থিতিশীলতায় চক্রান্তকারীদের ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে রক্ষার এখনি প্রকৃত সময় । বাংলার যে মুক্ত বাতাস থেকে প্রতিদিন আমরা সঞ্চিবনী শক্তি লাভ করি ,সেই বাতাসে বারুদের গন্ধ ছড়ানোর যে পায়তারা চলছে তা এখনি রুখে না দিলে ……..দেশ হয়তো ইরাক,আফগান, সিরিয়া বা আর একটি মিসরে পরিনত হতে বেশী সময় লাগবেনা।…..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন