বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১২

আর একটি বিপ্লবের আহবান



                  ৭১ এ যুদ্ধ করেছি,

রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি একটি মানচিত্র,

একটি স্বাধীন জাতিস্বত্বা।

কিন্ত, পেয়েছি কি অর্থনৈতিক মুক্তি ?

শ্রেনী বৈষম্যহীন সমাজ ?

আমার বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার ?


নিঃপেষিত বাঙ্গালী

আবারো হাতিয়ার তুলে নাও

রাইফেল তাক করো ওদের দিকে

এবং নিশানা ঠিক রেখে টিগার টিপতে থাকো,

যারা তোমাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে বীমা কোম্পানির অর্থ আদায় করে ,

আর তোমার দগ্ধ লাশের মূল্য নির্ধারণ করে ২০০০০ টাকায়।


ওরা তোমার রক্তকে ঘামে রুপান্তরিত করে পূঁজির পাহাড় গড়ছে

আর তোমাকে ক্ষুধার্ত কুকুরের মত হাড্ডি ছুরে দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে রেখেছে।


ওরা মানুষ নয় 

ওরা সুকৌশলী রাক্ষস

তোমাদের রক্তই ওদের খাদ্য।


তোমার ঘামে উৎপাদিত শষ্যে ওদের পেট ভরে,

অথচ ৫০০০ টাকার ঋণের দায়ে কোমরে দড়ি পরিয়ে

তোমাকে লক আপে ডুকিয়ে দেয়।


তুমি দিন রাত মিলকারখানার চাকা ঘুরিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখো,

অথচ ঐ অর্থ ওরা লুট করে বিদেশে পাচার করে

আর রঙিন পাগলা পানিতে মাতাল হয়ে

ফাইভ ষ্টার হোটেলের বেশ্যার কোলে ঢলে পড়ে।


ওরা তোমার স্বাধীনতার কোমল অনুভূতিকে পূঁজি করে ক্ষমতায় গিয়ে

স্বাধীনতা বিরোধী কাজ করে।

ওরা তোমার পবিত্র ধর্মীয় অনুভূতিকে পূঁজি করে ক্ষমতায় গিয়ে

অধর্মের কাজ করে।

ওরা দেশ প্রেমের কথা বলে দেশের সম্পদ বেনিয়াদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য

দেশবিরোধী চুক্তি করে ,

আর নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ হাছিল করে।


ওদের মুখস উন্মোচন করতে গেলেই

ওরা ঠান্ডা মাথায় বুদ্ধিজীবী হত্যা করে ,

সাংবাদিক হত্যা করে।

ওরা ২৫শে মার্চের হানাদারদের চেয়েও ভয়ংকর।


ওরা তোমার হাতে তিলে তিলে গড়া কলকারখানা নিলামে বিক্রি করে

তোমাকে বেকার করে রাস্তায় নামিয়েছে।

ওরা প্রতারনার ফাঁদ পেতে তোমার বেঁচে থাকার সর্বস্ব পূঁজিটুকু পূঁজিবাজার থেকে লুট করেছে ,

তোমার মধ্যবিত্তের সন্মানটুকু কেড়ে নিয়ে ভিক্ষুকের সারিতে দাড় করেছে।


এবার হাতিয়ার তুলে নাও এরং নিশানা ঠিক রেখে টিগার টিপতে থাকো

যতক্ষণ না জাতির এই নব্য রাজাকার ,আলদরদেরর নিশ্চিহ্ন ঘটে।


জাতির অহংকার ঐ ৭১ এর বীর প্রতীক ক্ষুধার জ্বালায় ভিক্ষার ঝুলি হাতে দ্বারে দ্বারে ঘোরে ,

ফেলানীর লাশ ঝোলে ভারতের কাঁটাতারে।

এ লজ্জা আর কত কাল বয়ে বেড়াবে।

এবার হাতিয়ার তুলে নাও এরং নিশানা ঠিক রেখে টিগার টিপতে থাকো

যতক্ষণনা শরীর থেকে অপমানের জ্বালা মেটে।


ওরা সমাজতন্ত্রের কথা বলে সমাজবিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়ে ক্ষমতার হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ওরা সুস্থ মস্তিস্কে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর জন্য তোমাকে চলন্ত ট্রেনের দিকে ঠেলে দিয়ে কাটা লাশ বানিয়ে বলি দিচ্ছে।

ওরা বিশ্বমানবতাকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে তোমাকে দিয়েই তোমার ভাইকে লগি বৈঠার আঘাতে হত্যা করাচ্ছে।

ওরা তোমার দরিদ্রতা ও কঙ্কালসার দেহকে প্রদর্শন করে দাতা সংস্থার ভিক্ষা এনে ভোগ করছে।

ওরা মরিয়ম ,জরিনা,ছকিনা,কালুমিয়ার যন্ত্রনাকাতর দেহকে অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে রেখে দর কষাকষি করে।

ওরা শিক্ষাকে পণ্য বানিয়ে বিভিন্ন ব্যান্ডে বাজারজাত করছে,

দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে বানিয়েছে এক একটি সামরিক ঘাটি

গ্রন্থের বদলে সরবারহ করছে অস্ত্র গোলাবারুদ

শিক্ষার বদলে চলছে সশস্ত্র মহড়া

আর সম্মুখ সমরে তোমাকে দিয়েই তোমার ভাইকে হত্যা করিয়ে ওদের ক্ষমতার কালো সিংহাসন পাকাপক্ত করছে।


এবার অস্ত্রের নিশানা তোমার ভাইয়ের বুক থেকে ঘুরিয়ে ওদের দিকে তাক করো

এবং নিশানা ঠিক রেখে টিগার টিপতে থাকো

যতক্ষণ না ওদের সমূলে বিনাস ঘটে।


৫৫৫৯৯ বর্গমাইল সীমানার পবিত্র ভূমির প্রতি সেঃমিঃ ভূমি তোমার,

দেশের প্রতিটি অবকাঠামো তোমারই ইস্পাত হাতে গড়া ,

ঐ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে শক্ত হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার অধিকার তোমারও আছে।

ভগ্নস্তূপের উপর দাড়ানো ক্যান্সার আক্রান্ত প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙ্গে দুমরে মুচরে এবার তোমার হাতেই সাজাতে হবে।


হে নিঃপেষিত ,নিপীড়িত,নিরন্ন,প্রতারিতও প্রবঞ্চিত বাঙ্গালীর দল,

এবার ঐ ৪৭,৫২,৬৭,এবং৭১ এর দিকে ফিরে তাকাও,

প্রতিটি শহীদের নামে শপত গ্রহন করো, এবং

 জাতির এই ক্রান্তিকালে সুশৃংখল সৈনিকের মত এক সারিতে দাঁড়িয়ে রাইফেল হাতে তুলে নাও

এবং নিশানা ঠিক রেখে টিগার টিপতে থাকো ,

যতক্ষননা শাসনের নামে শোষন চলতে থাকে

যতক্ষন না তোমার বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত হয়।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন